সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট, হংকং-এ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩ যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়েছে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি মারফত এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক জানা গেছে, দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষ্যে, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, হংকং কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচি গুলোর মধ্যে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, ভাষা শহিদসহ সকল শহিদদের স্মরণে কনসাল জেনারেল-এর নেতৃত্বে উপস্থিত অন্যান্য কনসাল জেনারেল ও প্রবাসী বাংলাদেশীরা মহান ভাষা শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, হংকং এ নির্মিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা, বিশেষ প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন, বাংলাদেশ ও নেপাল-এর শিল্পীদের অংশগ্রহনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন এবং সবশেষে ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ প্রার্থনা ছিলো উল্লেখযোগ্য।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশসহ ভারত, নেপাল, কম্বোডিয়া, লাওস, ব্রুনেই দারুসসালাম, মালয়েশিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল ও ভেনেজুয়েলা-এর কনসাল জেনারেল ও চেক প্রজাতন্ত্র’র ডেপুটি কনসাল জেনারেল মিলে ১০ দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের লেইজার এন্ড কালচারাল সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট এর চীফ ম্যানেজার (ফিল্ম এন্ড কালচারাল এক্সচেঞ্জ), এডুকেশন ব্যুরো এর সিনিয়র কারিকুলাম ডিপার্টমেন্ট অফিসার (ইংরেজী) প্রতিনিধিসহ হংকং এর স্বনামধন্য একজন লেখক এবং হংকং এর প্রসিদ্ধ সংবাদপত্র চায়না ডেইলী’র বিশিষ্ঠ সাংবাদিকসহ সুধিজন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে হংকং-এ বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহন করেন।

দিবসের শুরুতে কনসাল জেনারেল মিজ্ ইসরাত আরা কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ করেন। পবিত্র কোরআ’ন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বানী পাঠ করা হয়। এছাড়া ইউনেস্কো এর মহাপরিচালকের প্রদত্ত বানীর কিছু অংশ পাঠ করে উপস্থিতিদের শুনানো হয়। এরপর দিবসটির উপর নির্মিত একটি প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনসাল জেনারেল মিজ্ ইসরাত আরা। কনসাল জেনারেল মিজ্ ইসরাত আরা তাঁর স্বাগত বক্তব্যে মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভাষা সংগ্রামের পথ ধরেই বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশের গৌরবময় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক আগ্রহ ও প্রবাসী দু’জন বাংলাদেশীর উদ্যোগে এ দিবসটি আজ বিশ্ব দরবারে সুমহান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কনসাল জেনারেল মিজ্ ইসরাত আরা বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এ দিবস শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি আজ জাতিসংঘের আন্তর্ভূক্ত পৃথিবীর সব দেশ ও সংস্কৃতির দিবস। তাই এই দিনটি, পৃথিবীর সকল দেশের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ ও নেপাল-এর শিল্পীদের অংশগ্রহনে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। সবশেষে, কনসাল জেনারেলে-এঁর সৌজন্যে অতিথিগনকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার, পিঠা ও মিষ্টান্ন’র মাধ্যমে আপ্যায়ন করা হয়।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা প্রথমবারের মত কনস্যুলেটে এসে অংশগ্রহন করে এরকম একটি দিবস সম্পর্কে জানতে পেরে কনসাল জেনারেলসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান।