যাদের ত্যাগ তীতিক্ষার বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন বাংলার নাগরিকের পরিচয় বহন করি, জাতির সেইসকল শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে সরকারি ভাবে একটি দিবস পালনের দাবি উত্থাপন করা অত্যন্ত যৌক্তিক।
এই যৌক্তিক দাবির জায়গা থেকে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে ১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে বেসরকারিভাবে পালন করে আসছে।
এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অবিলম্বে ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ কর্তৃক আয়োজিত সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা ১ ডিসেম্বরকে সরকারি ভাবে মুক্তিযোদ্ধা দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে ‘শিখা চিরন্তন’ ভাস্কর্যের বেদিতে ফুল দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারিভাবে পালন করে আসছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০২১ সালে দিনটি স্বীকৃতির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জোর সুপারিশ করলেও আজ পর্যন্ত দিবসটির সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এখনও দিনটির সরকারি স্বীকৃতি না পাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন তাঁরা।
সমাবেশে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ এর কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহা. নুরুল আলম, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব, সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন, আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোহাম্মদ আসালত ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা মুজিবুর রহমানসহ অনেকে তাদের বক্তব্যে অবিলম্বে ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস ঘোষণার দাবি জানান। তাদের এমন যৌক্তিক দাবির সাথে ঐকমত্য পোষণ করেছেন স্বাধীনতার পক্ষের বিভিন্ন পেশাশ্রেণীর জনগন।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), মুক্তিযোদ্ধা দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য জোটসহ বিভিন্ন সংগঠন ‘শিখা চিরন্তন’ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সমাবেশের শেষ পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান উপস্থিত সবাইকে শপথবাক্য পাঠ করান। এর আগে বক্তব্য রাখেন জাসদ সভাপতি ও সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, ‘এদিন আমরা ছুটি চাই না; কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই।’ ঝুলিয়ে রাখা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে জারি করার দাবিও জানান তিনি।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর পশ্চিম জাসদের সভাপতি মো. নরুন্নবীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাসদ সহসভাপতি মীর হোসাইন আখতার, শ্রমিক জোটের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, জাসদের যুগ্ম সম্পাদক মীর্জা আনোয়ার, মহানগর পশ্চিম জাসদের সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল প্রমুখ। এ ছাড়া ১ ডিসেম্বর সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালন করেছে স্বাধীনতার পক্ষের বিভিন্ন সংগঠন।