শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শেরপুরে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন করা হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’র জেলা কমিটি গঠন: সভাপতি নজরুল, সম্পাদক হযরত নকলায় ফাহিম চৌধুরীর গণ সংযোগ ও পথসভায় জনতার ঢল নকলায় শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যের আহবান নকলার বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন’র মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন ছাত্রনেতা জুবায়েদ হত্যার বিচার দাবিতে নকলায় কলেজ ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা পানিফলে কয়েকগুণ লাভ, বানিজ্যিক ভাবে চাষে ঝুঁকছেন কৃষক নকলার বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন আর নেই নকলায় শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন জোরদারে স্থানীয় পর্যায়ে করনীয় বিষয়ক সভা আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীর সাথে একমত পোষণ করে বিএনপি’র বিবৃতি

শত উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণা নকলার নূরে আলম সিদ্দিক

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি:
  • প্রকাশের সময় | মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২
  • ২১৮ বার পঠিত

নকলা উপজেলার মো. নূরে আলম সিদ্দিক (রুবেল) শত উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণা। তিনি ৩০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে খামার ব্যবসা শুরু করেন। ৫ বছরের ব্যবধানে তিনি আজ কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক। তিনি শেরপুর জেলার নকলা পৌরসভাধীন চরকৈয়া এলাকার এক মুসলিম পরিবারে ১৯৮৪ সালের অক্টোবর মাসের ১২ তারিখে জন্ম গ্রহন করেন। মাওলানা মো. ফজলুল হক ও মোছা. নূরজাহান বেগম দম্পত্তির ৩ ছেলে সন্তানের মধ্যে মো. নূরে আলম সিদ্দিক (রুবেল) দ্বিতীয় সন্তান।

নূরে আলম সিদ্দিক ২০০০ সালে এসএসসি ও ২০০২ সালে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি এসএসসি পরীক্ষার পাশের গ্রামের এক যুবককে দেখে শখ করে তার বাবার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে মাত্র ৩০০টি মুরগীর বাচ্চা দিয়ে পোল্ট্রি খামারের যাত্রা শুরু করেন। এর পরে তাকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি।

খামার শুরুর পরের বছর ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে পশু সম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় বানিজ্যিক ভাবে মুরগী উৎপাদনের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। ২০০২ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে বানিজ্যিক ভাবে মুরগী পালন, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।

সকল প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে খামারে দিনে অধিকাংশ সময় দেওয়ায় বেশ লাভবান হন। প্রচুর লাভ পাওয়ায় মো. নূরে আলম সিদ্দিক (রুবেল) এইচএসসি পাশের পরে পড়ালেখা বন্ধ করেদিয়ে খামার ও পোল্ট্রি এন্ড ফিস ফিডের ব্যবসাতে আত্ম নিয়োগ করেন। ২০০৫ সালে নারিশ পোল্ট্রি এন্ড ফিস ফিডের ডিলার শীপ নেন। ২০১৮ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে মৎস্য চাষের ওপর এক মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। ওই বছরই শুরু করেন বানিজ্যিক ভাবে মৎস্য চাষ। ২০২১ সাল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর হতে আত্মকর্মী থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। এর পরে কয়েক মাসের মধ্যে মো. নূরে আলম সিদ্দিক (রুবেল) আত্মকর্মী থেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সর্বজন স্বীকৃতি পেয়ে যান। রাতারাতি তার এমন সফলতা দেখে উপজেলার অনেক শিক্ষিত বেকার হতাশার জাল থেকে বেড়িয়ে এসে নূরে আলম সিদ্দিকের কাছে পরামর্শ নিয়ে শুরু করেন পোল্ট্রি, ডেইরী, হেচারী, মৎস্য ও ফলজ বাগান করা। নূরে আলম সিদ্দিকের দেখাদেখি উপজেলার শতাধিক শিক্ষিত বেকার আজ সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

সফল এই উদ্যোক্তার ২০ হাজার মুরগীর বাচ্চা লালন পালনের জন্য ৪টি শেড, ২ একর জমিতে ৪ টি পুকুর, ২০টি গরু (গাভীসহ) লালন পালনের ঘর, বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে ফল ও শাক-সবজীর বাগান। তার পোল্ট্রি এন্ড ফিস ফিডের ব্যবসা (পরশ এন্টার প্রাইজ), নূর এগ্রোফার্ম, ফলের বাগান ও মুরগীর খামারে ১২ জন শ্রমিক বাৎসরিক হিসেবে এবং দৈনিক মজুরি হিসেবে ৭/৮ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। এতে করে উপজেলার খেটে খাওয়া ১৬ থেকে ২০ টি পরিবার তাদের আয়ের পথ খোঁজে পেয়েছে। তারাও হয়েছেন স্বাবলম্বী। তাছাড়া নূরে আলম সিদ্দিকের পরামর্শে স্বাবলম্বী হয়েছেন উপজেলার শিক্ষিত বেকার শতাধিক যুবক ও যুবনারী। শিক্ষিত বেকার এসকল যুবক ও যুবনারীরাও আজ নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি পেয়েছেন। নতুন উদ্যোক্তাদের সবার কাছে নূরে আলম সিদ্দিক একজন মডেল হিসেবে পরিচিত।

 

মো. নূরে আলম সিদ্দিক (রুবেল) আত্মকর্মী থেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় এটিএন বাংলা টেলিভিশনসহ দেশের কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তার সফলতা ঘটা করে প্রচার করা হয়। তিনি মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকে বেশ কিছু সনদপত্র ও পুরষ্কারও জিতে নেন।

নূরে আলম সিদ্দিকের সফলতা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক থেকে শুরু করে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তাগন দফাদফায় তার সফলতার কর্মস্থল পরিদর্শন করেন। তারা সকলেই নূরে আলম সিদ্দিককে শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুবনারীদের ভাগ্য পরিবর্তনের রোল মডেল বলে আখ্যা দিয়েছেন। এদেখে জেলা ও উপজেলার অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুবনারী হতাশার জাল থেকে নিজেদের ফিরিয়ে এনে ডেইরী, ফলজ বাগান, হেচারী ও মৎস্য চাষ শুরু করে সফল হয়েছেন, হয়েছেন স্বাবলম্বী।

মো. নূরে আলম সিদ্দিক (রুবেল) বলেন, লেখাপড়া করলেই যে চাকরি করতে হবে, এই ধারনাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। দেশের প্রতিটি বেকার যুবক ও যুবনারী চাইলে অল্প পুঁজি খাঁটিয়ে ও নিজের কায়িক শ্রমকে কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারেন। তিনি বলেন ‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি’ এটা চিরন্তন সত্য। স্বাবলম্বী হতে পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন। াার এই বিশ্বস থেকেই তিনি আজ সফল উদ্যোক্তার পাশাপাশি বেকারদের সফলতার ক্ষেত্রে একজন রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন বলে অনেকে মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ

এই জাতীয় আরো সংবাদ
©২০২০ সর্বস্তত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | সমকালীন বাংলা
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102