শেরপুরের নকলা উপজেলায় টানা ৪০ দিন জামাতের সহিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করায় ৯ শিশুকে বাইসাইকেল উপহার দেওয়া হয়েছে। উপজেলার উরফা ইউনিয়নের উরফা পূর্বপাড়ার সাহের উদ্দিন মেম্বার বাড়ী সংলগ্ন “জামে মসজিদ” কমিটি এলাকার শিশু-কিশোরদের মসজিদের দিকে আগ্রহী করতে তথা নামাজ মুখী করতে এ অভিনব কৌশল অভলম্বন করেন।
জানা গেছে, উরফা গ্রামের ইরাক প্রবাসী পারভেজ হাসান ও মসজিদ কমিটির উদ্যোগে নিয়মিত মসজিদে গিয়ে জামাতের সহিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েমের প্রতিযোগীতার আয়োজন করেন এবং বিজয়ীদের মাঝে বাইসাইকেল উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেন। প্রতিযোগিতার শুরুতে এলাকার প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ জন শিশু-কিশোর মসজিদে গিয়ে জামাতের সহিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম শুরু করে। কিছু দিনে মধ্যে কমতে থাকে। শেষ দিকে ২১ জন শিশু-কিশোর টিকে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন কারনে জামাতের সহিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করতে না পারায় ২১ জন শিশু-কিশোরের মধ্যে ১২ জন প্রতিযোগীতা থেকে বাদ পড়ে যায়। অবশেষে ৯ জন শিশু-কিশোর টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের সহিত আদায় করে বাইসাইকেল বিজয়ী হয়।
১২ মে বুধবার সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এক বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ বিতরণী অনুষ্ঠানের মাধ্যেমে বিজয়ী ৯ শিশুর-কিশোরের মধ্যে ৭জন শিশুকে একটি করে বাইসাইকেল ও অন্য দুইজন শিশু সাইকেল চালাতে না পারায়, তাদের চাহিদা অনুযায়ী সাইকেলের সমমূল্য নগদ টাকা প্র্রদান করা হয়। তাছাড়া এ প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণকারী সকলে হাতে ঈদ-উল-ফিতরের উপহার হিসেবে একটি করে নতুন পাঞ্জবী তুলে দেওয়া হয়।
দেশের প্রতিটি এলাকায় এমন সৃষ্টিশীল উদ্যোগ নিতে পারলে শিশু-কিশোর অপরাধ কমে যাবে বলে মনে করেন অনেকে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমবে, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও রীতি নীতি পালনে আগ্রহী হবে, মানবিক ও উদার মনোভাব নিয়ে তারা বেড়ে উঠার সুযোগ পাবে। ফলে ধীরে ধীরে সৃষ্টি হবে আদর্শ মানবিকতা, এমনটাই মনে করেন আয়োজক, স্থানীয় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন পেশা শ্রেনীর জনগন। তারা বলেন, দেশের প্রতিটি মসজিদে এমন বড় ব্যয়ের আয়োজন না হলেও, সামান্য উপহারের বিনিময়ে শিশু-কিশোরদের মধ্যে ভালো কাজের প্রতিযোগীতার আয়োজন করতে পারলে কোন এক সময় দেশ থেকে সামাজিক অপরাধ দূর হয়ে যাবে।