শেরপুরের নকলায় শেখ শামীম (৪২) নামে ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তান ফেলে রেখে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নিয়ে উদাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শামীম উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নের দুধেরচর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত হায়াতুল্লাহর ছেলে। সে উপজেলার ৬নং পাঠাকাটা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ২ সন্তানের জনক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, শামীম স্থানীয় বাজারে ছোট একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসার নামে সেখানে মূলত দাদন ব্যবসা পরিচালনা করে। তারা আরো জানান, শামীম একজন দাদন ব্যবসায়ী ও নেশাগ্রস্ত হলেও সে সরকারি দলের নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সবাই মুখ খোলতে ভয় পায়।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীর বাবা রেজাউল করিম একজন দরিদ্র ভ্যান চালক ও মা ইউনিয়ন পরিষদের কর্মসূচির মাটি কাটার কাজ করেন। তবে তাদের মেয়ে মেধাবী ও সুন্দর হওয়ায় মেয়ের প্রতি ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি শেখ শামীমের কুনজর পড়ে। শামীম বিভিন্ন সময় সরকারের সুযোগ সুবিধা দেয়ার কথা বলে কারনে অকারনে রেজাউল করিমের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে।
শিক্ষার্থীর মা জানান, তাদের বাড়িতে শামীমের বেশি বেশি আসা যাওয়া সন্দেহজনক মনে হলে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে শামীম নাকি তাকে বিয়ের লোভ দেখিয়ে প্রায় কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। এতে রাজি না হওয়ায় সরাসরি পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মেয়ে অপ্রাপ্ত হওয়ায় বিয়েতে রাজি না হওয়ায় কৌশলে ও ভয় দেখিয়ে প্রথম স্ত্রী-সন্তান ফেলে রেখে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে নিয়ে উদাও হয়ে যায় শামীম। যা নকলার রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসে ন্যাক্কার জনক ঘটনা বলে অনেকে মনে করছেন।
এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা রেজাউল করিম নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কাদের মিয়াকে মৌখিক ভাবে জানালে তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পরামর্শ দিয়েছেন বলে ভূক্তভোগী পরিবার জানিয়েছেন। এদিকে ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা শামীমের পরিবারের লোকজন ও তার স্ত্রী সন্তানরা এ ঘটনায় খুবই লজ্জিত ও মর্মাহত। এবিষয়ে আর কোন কথা বলতে তারা নারাজ।
শিক্ষার্থীর বাবা-মা অতিদরিদ্র এবং শামীম যুবলীগ নেতা হওয়ায় স্বাভাবিক কারনেই ভয়ে মেধাবী মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। এবিষয়ে সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন ভূক্তভোগী পরিবারসহ অনেকে। তবে শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের বিশ্বাস জনবান্ধব সরকারের স্থানীয় প্রশাসন অবশ্যই এমন সকল ঘটনার সঠিক বিচার নিশ্চিত করবেন।
শিক্ষার্থীর মা বলেন, আমার মেধাবী মেয়েকে শামীম জোর পূর্বক ভাবে উঠিয়ে নিয়ে ১১ দিন ধরে উদাও হয়েছে। এ বিষয়ে পাঠাকাটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, শুনেছি শামীম নাকি এক স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অপ্রাপ্ত মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া একদিকে লজ্জা ও ন্যাক্কার জনক, অন্যদিকে আইনভঙ্গের সমিল। তাই এবিষয়ে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করছেন।
এবিষয়ে থানার ওসি কাদের মিয়া জানান, এমন একটি ঘটনা মৌখিক ভাবে শুনেছি, তবে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরিবারের পক্ষথেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।