শেরপুরের নকলায় ৮নং চরঅষ্টধর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য ঘোষিত কার্যকরী কমিটি বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। শনিবার বিকেলে নারায়নখোলা স্কুলের পাশের রাস্তায় ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী, সদ্য ঘোষিত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান, সদস্য শরীফুজ্জামান রিপন সরকার, গোলাম সারোয়ার তারেক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক, ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সজল সরকার, ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, ৬নং ওয়ার্ডের নেতা খলিলুর রহমানসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন- ঘোষিত কমিটির সভাপতিসহ অনেককেই আওয়ামী লীগের দলীয় কোন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করতে ইউনিয়নের কেউ কখনো দেখেনি। এমন অরাজনৈতিক লোককে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া মানেই দলের জন্য জেনে শুনে ক্ষতি ডেকে আনা ছাড়া আর কিছুই না। তাই বিতর্কিত সভাপতি ও বেশ কিছু নেতাকে বাদ দিয়ে তৃণমূলের আওয়ামী লীগের প্রকৃত ও ত্যাগী নেতা-কর্মীর সমন্বয়ে কমিটি করার দাবী জানান তারা। তারা আরো বলেন, সদ্য ঘোষিত কমিটিতে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে উল্টা অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এ কারনে ঘোষিত কমিটিতে লিখিত নামের ৫১ জনের মধ্যে অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ এ বিতর্কিত কমিটি থেকে পদত্যাগ করবেন বলে বক্তব্যের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সুস্পষ্ট জানিয়ে দেন। এমনকি তাৎক্ষণিক ১৮ জন লিখিত আকারে কাগজে নিজ নাম স্বাক্ষর করে পদত্যাগের ঘোষনা দেন। পরে আরো ২০জনসহ মোট ৩৫ জন এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে সদ্য ঘোষিত কমিটি থেকে ৩৫ জনের পদত্যাগপত্র উপজেলা আওয়ামী লীগের যথাযথ কর্তৃপক্ষ (সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক) এর কাছে পৌঁছানো হবে বলে বক্তারা জানান।
বক্তারা আরো বলেন- সদ্য ঘোষিত কমিটিতে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে উল্টা অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এর কারন হিসেবে বক্তারা বলেন, অর্থ লেনদেন ও স্বার্থের কারনে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অন্যদলের লোকদেরকেও এই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান করে দেয়া হয়েছে; যা প্রকৃত আওয়ামী লীগ তথা ত্যাগী নেতা-কর্মীদের জন্য লজ্জা জনক বলে তারা মন্তব্য করেন। বক্তাদের সাথে সাথে উপস্থিত হাজারো নেতা-কর্মী সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতৃত্ব না মানার শ্লোগান দেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৮ই মার্চ তারিখে উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করার পর পরই পদ বঞ্চিতরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এসময় উভয়পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। অনাকাঙ্খিত এই পরিস্থিতিতে পরবর্তীতে আলোচনা করে কমিটি ঘোষণা করার কথা জানিয়ে চলে যান নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলন অনুষ্ঠানের ৬ মাস পর গত ৩ সেপ্টেম্বর এমরান হোসেনকে সভাপতি ও ছিয়াবুল বাদশাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক ইউনিয়ন কমিটি অনুমোদন দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ। ওই কমিটি ঘোষণার পরে আবারো স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। বিক্ষোব্ধ নেতা-কর্মীরা সদ্য ঘোষিত কমিটি অনুমোদনের প্রতিবাদে নারায়নখোলা বাজারে শনিবার বিকেলে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মী।
এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আম্বিয়া খাতুন বলেন- আমরা যথেষ্ট যাচাই বাছাই করে যোগ্য ও প্রকৃত আওয়ামী লীগের লোকজনের সমন্বয়েই নতুন কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটিতে পদবঞ্চিতরা মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। চরঅষ্টধর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে কোন প্রকার অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি করা হয়নি বলেও তিনি জানান।