শেরপুরের নকলায় গত আগস্ট মাসে উপজেলার ২৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক (সিসি) থেকে স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবা নিয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭৮ জন রোগী।
জান গেছে, উপজেলার ২৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে চকপাঠাকাটা ক্লিনিকটি উপজেলা সদর থেকে দূরে ও সর্বাধিক মফস্বলে অবস্থিত হওয়ায় এখান থেকে সবচেয়ে বেশি (১,১১৩ জন) রোগী সেবা নিয়েছেন।
সেরা কমিউনিটি রেজিস্ট্রেশন-২০২২ এ বিভাগীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিলো উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নের চকপাঠাকাটা কমিউনিটি ক্লিনিক। ক্লিনিকে প্রায় ৩০ ধরনের ঔষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করছে সরকার। ঔষুধের পরিমাণ ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সুযোগ সুবিধা বাড়ালে ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যা ও সেবার মান বাড়বে বলে মনে করছেন সর্বসাধারন।
কমিউনিটি ক্লিনিক ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আউটডোরের সেবা নিয়েছে ১৫ হাজার ৮৯৮জন রোগী, ইনডোরে সেবা নিয়েছেন ৮৯৫ জন, জরুরি বিভাগ থেকে সেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৪১৬ জন রোগী। এছাড়া আগস্ট মাসে ৩ হাজার ২৬৯ টি প্যাথলজিক্যাল টেস্ট, ২ হাজার ৭৩২ জন রোগীকে এনসিডি কর্নারের সেবা, ১ হাজার ৭০৪ জন শিশুর আইএমসিআই সেবা দেওয়া হয়েছে। ওইমাসে ১৩২ জনকে এক্স-রে ইসিজি ও আলট্রাসাউন্ড সেবা প্রদানের পাশাপাশি ২৪১ জনের ছোট অপারশেনসহ ১০৩ টি নরমাল ডেলিভারী করা হয়েছে। এছাড়া ৪০১ টি রোগীর এএনসি এবং ১১৬ টি রোগীর পিএনসি সেবা আগস্ট মাসে হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়েছে। চলমান রয়েছে বিনামূল্যে জরায়ুর মুখ ও ক্যান্সার শনাক্তকরণসহ বিভিন্ন ধরনের জরুরি সেবা। এসব তথ্য জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা।
বাউসা কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এস.এম মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা নিজ নিজ ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। যে সকল কমিউনিটি ক্লিনিকের এলাকা থেকে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো সেসব এলাকার রোগীরা সহজেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবানিতে চলে যান। ফলে ওইসব ক্লিনিকে রোগীরা সংখ্যা কম হলেও প্রতিমাসে প্রায় হাজার খানেক রোগীকে সেবা দিতে হয়।
বেশ কয়েকজন সিএইচসিপির সাথে কথা হলে তারা জানান, গ্রামীণ জনপদে কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিসির) স্বাস্থ্য সেবা ও গুণগত মানের কারনেই অল্প সময়ের মধ্যে তারা বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এবিষয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা-এঁর আন্তর্জাতিক সম্মাননা প্রাপ্তি তাদেরকে বিশ্বব্যাপী পরিচয় করিয়ে দিয়েছে বলে তারা মনে করেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবার জন্য স্বাস্থ্য বান্ধব সরকারের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা’র আন্তর্জাতিক সম্মাননা পাওয়ায় দেশবাসী আজ গর্বিত বলে এস.এম মনিরুজ্জামান মনে করেন।
গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্য সেবার মান আরো উন্নত করতে প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে অন্তত একজন করে এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তার বা একজন করে মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি বেশি করে উন্নত মানের ঔষুধ ও আধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহের দাবী জানান কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডারগন। তারা বলেন, গ্রামের সাধারণ জনগন অধিকাংশরা কৃষিজীবী। হাতের নাগালে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ায় গ্রামের সাধারণ জনগন আজ বেজায় খুশি। এখন প্রতিটি ক্লিনিকে আধুনিক সরঞ্জাম ও চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলে গ্রামের লোকজনকে টাকা ও সময় নষ্ট করে জেলা-উপজেলা হাসপাতালে যেতে হবেনা। তাতে একদিকে কৃষকের টাকা ও সময়ের অপচয় কমবে, অন্যদিকে কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়বে বলে তারা মনে করেন। তাছাড়া অনেক চিকিৎসকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে মত দিচ্ছেন সুশীলজন।