সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংগঠনটির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সংবাদ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবে (জবি প্রেসক্লাব) কর্মরত সাংবাদিকরা।
শনিবার সংগঠনের জরুরি সভায় সিদ্ধান্তের পর সভাপতি মোস্তাকিম ফারুকী ও সাধারণ সম্পাদক আরমান হাসান এক যৌথ বিবৃতিতে এ বয়কটের লিখিত ঘোষণা দেন।
চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির অনুসারী গাজী মো. শামসুল হুদাসহ একাধিক ছাত্রলীগ কর্মী সাংবাদিককে হেনস্তা ও সাংবাদিক সংগঠনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন পত্রিকায় অভিযুক্ত গাজীর চাঁদাবাজির খবর প্রকাশিত হওয়ার পরও কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
এর আগে দৈনিক জনবাণীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ছাত্রলীগের দুই পক্ষের ধাক্কাধাক্কির ভিডিও ধারণকালে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে হেনস্তা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর একটি মারামারির ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে অতর্কিত হামলা করেন শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে ক্যাম্পাসের অন্যান্য সাংবাদিকরা হামলাকারীকে চিহ্নিত করতে গেলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ কর্মী সুজন দাশ অর্ক, তুর্য ও চিঠি কমিটির কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক রায়হান কবির চার জন সাংবাদিকর ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এ ঘটনাতেও সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ছাত্রলীগ।
যৌথ বিবৃতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তাকিম ফারুকী বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের ছাত্রলীগ কর্মীদের হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। এমনকি হেনস্তাকারীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ থাকার পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তাই জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত আমরা ইতিবাচক সংবাদ বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সাধারণ সম্পাদক আরমান হাসান বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে বারবার সাংবাদিক হেনস্তা ও হামলার ঘটনা ঘটলেও শাখা ছাত্রলীগ কিংবা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে এবং সাংবাদিকরা নিরাপত্তা সংকটে ভুগছেন। তাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের সকল ধরনের ইতিবাচাক সংবাদ বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’