শেরপুরের নকলা উপজেলায় স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর উপর হামলার প্রতিবাদে ও অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতার দাবীতে মানব বন্ধন করেছে এলাকাবাসীসহ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৯ টার সময় উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়নের ইসলামনগর সাইলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকের বাহিরে বাউন্ডারী সংলগ্ন পাকা রাস্তার উপর পৌণে একঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে চরবসন্তী এলাকার সাধারণ জনগনসহ ওই এলাকার শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহন করে।
মানববন্ধনে ইসলামনগর সাইলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী তাইয়েবা আক্তারসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা তাইয়েবার উপর হামলা মামলার অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানান।
তাইয়েবার দাদা চরবসন্তী এলাকার জলিল খান জানান, তার নাতনী তাইয়েবা আক্তার (১৪) স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে একই এলাকার মৃত আব্দুল লতিফ খানের ছেলে জিন্নাহ খান (১৮) প্রায়ই উত্যক্ত করতো এবং প্রেমের প্রস্তাব দিতো। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ও তাইয়েবার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করায় রাগের বশবর্তী হয়ে জিন্নাহ খান তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ১৭ অক্টোবর সোমবার রাত ৯টার দিকে বাড়িতে হামলা চালায়। এতে বাকপ্রতিবন্ধী এনামুল হক খানের মেয়ে তাইয়েবা আক্তারের হাতে দায়ের কুপ লেগে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২/১৩ দিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়।
এই ঘটনায় তাইয়েবার দাদা জলিল খান ৫ জনকে অভিযুক্ত করে নকলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত আসামীদের মধ্যে প্রধান আসামী পলাতক, আর বাকি সবাই জামিনে রয়েছেন। তাই অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবীতে মানববন্ধন করেন কতিপয় এলাকাবাসীসহ বেশ কিছু শিক্ষার্থী।
এবিষয়ে ইসলামনগর সাইলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা (ভারপ্রাপ্ত) সালমা আক্তার বলেন, মানববন্ধনের বিষয়টি আমিসহ আমার বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক-কর্মচারীরা জানেননা। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে কেউ বিরক্ত বা উত্যক্ত করলে তা অন্তত আমাকে জানানো উচিত ছিলো। তাইয়েবা আক্তার প্রিয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন। সে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে তাকে কেউ উত্যক্ত করবে, আর আমি জানবনা! এটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। তবে সত্যিই যদি শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ্য করে হামলার ঘটনা ঘটে থাকে, আমি একজন শিক্ষক হিসেবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। দেশের যেকোন শিক্ষার্থীর উপর হামলা করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে এর উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত বলে প্রধান শিক্ষিকা সালমা আক্তার জাননা।
অভিযোগের ভিত্তিতে এলাকাবাসীদের অনেকে বলেন, বিষয়টি যদি প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া বা রাস্তায় উত্যক্ত করার কারনে ঘটতো, তাহলে সবার আগে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে জানানো হতো। তাছাড়া জিন্নাহ খান তার সহোদর বড় ভাই আব্দুল হালিম খান (৫৫), কাইয়্যুম খান ওরফে কেন্না (৫০) ও আব্দুল মান্নান খান (৪৮) এবং আব্দুল হালিম খানের ছেলে তথা জিন্নাহ খানের ভাতিজা আলমগীর খান (১৯) কে সাথে নিয়ে মেয়ের বাড়িতে হামলা করার কথা নয়। বাদী ও বিবাদী যেহেতু একই এলাকার ও পাশাপাশি বাড়ির, অতএব বিষয়টি পারিবারিক পূর্ব শত্রুতার জেরে ঘটতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এঘটনায় যেহেতু একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে, সেহেতু প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মূল বিষয়কে গোপন রেখে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীর উপর হামলাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। তাই ঘটনা ও মামলার সুষ্ঠু তদন্তে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার দাবী করেন স্থানীয় অনেকে।