স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে, স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। এই কঠিন কাজটি সহজ থেকে সহজতর করবে আগামীর কান্ডারী আজকের শিক্ষার্থীরা। এমন ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর তাসলিমা বেগম রিতা। তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সহজে আসেনি। বাঙালি জাতির পিতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর দক্ষ নেতৃত্বে দীর্ঘ্য ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, মা-বোনের ইজ্জত ও শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। এই স্বাধীনতা অর্জনে যতটা না বেগ পেতে হয়েছে, তার চেয়ে আরও কঠিন বেগ পেতে হবে স্বাধীনতা রক্ষা করা। তবে এই কঠিন কাজটি করার দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষার্থীদের। তিনি আরও বলেন ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক মানুষকে চলতে এবং ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি পেতে মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই প্রতিটি মুসলিমের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা গ্রহন করা অতিব জরুরি বলে মনে করেন প্রফেসর তাসলিমা বেগম।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মিলনায়তনে মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নিজ অর্থায়নে শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে সবার হায়াত ক্ষণিকের। এই ক্ষণিকের হায়াতের পৃথিবী ছেড়ে আমাদের সকলেকেই একদিন চিরতরে চলে যেতে হবে। আমাদের মৃত্যুর পরে যেন আপনার-আমার নাজাতের জন্য দু’হাত তুলে দোয়া করতে পারে এমন সন্তান রেখে যাওয়া প্রতিটি মুসলানের ঈমানী দায়িত্ব। তাই আমাদের উচিত সন্তানদেরকে ইসলামি শিক্ষা তথা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করানো।
বর্তমানের মাদ্রাসা শিক্ষা আর আগের মতো পিছিয়ে নেই, বরং বর্তমানের মাদ্রাসা শিক্ষা সাধারণ শিক্ষার চেয়েও এগিয়ে। আজকের মাদ্রাসা শিক্ষা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বাংলা ও ইংরেজী ভাষার পাশাপাশি বাধ্যতামূলক আরবী শিক্ষা গ্রহন করছে। ফলে তাদের ওপর আল্লাহর অশেষ রহমত নাজিল হওয়াাট স্বাভাবিক এবং হচ্ছে। এমন বহু প্রমান রয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত সন্তানরা উচ্চ শিক্ষা অর্জনের বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষাসহ যেকোন চাকরির পরীক্ষায় অন্যসকল শিক্ষার্থীর সাথে পাল্লা দিয়ে বরাবরই এগিয়ে রয়েছে। এতে করে যেমন ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি পাওয়ার আশা করতে পারছি, তদ্রুপ আমাদের সন্তানরাও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহন করে নিজেকে উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে সক্ষমতা অর্জন করছে। বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার নিজস্ব অর্থায়নে মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখার শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর তাসলিমা বেগম এসব কথা বলেন।
সদ্য বিদায়ী মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাহবুব হোসাইন রুপমের সঞ্চালনায় উপবৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগনের জরুরি করণিয় বিষয়ে সুপার মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও বানেশ্বরদী ইউপির চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার, বিরিচর রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যাপক মাওলানা মো. রেজাউল করিমসহ অন্যান্যা বক্তারা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
এসময় বঙ্গবন্ধু শিক্ষা-গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সহসভাপতি ও ধনাকুশা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনসুর আলী, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা-গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও নকলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা-গবেষণা পরিষদ নকলা উপজেলা শাখার কার্যকরী সদস্য ও নকলা প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টু, বানেশ্বরদী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সহকারী শিক্ষক মোসাম্মৎ রোকেয়া আক্তার, শওকত আলী, নুসরাত জাহান নিপা, ফাহমিদা আহম্মেদ তনু, সহকারী মৌলভী মাওলানা মো. ফজলুল করিম ও মাওলানা ফুলেছা বেগম, সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দিন, তাহেরা সুলতানা, কব্দুল হোসেন, ইয়াছিন আহাম্মেদ, আমিন মিয়া, আরিফ হোসেন, লাবনী বেগম ও উজ্জল মিয়াসহ মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ, অভিভাবকগন, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মাদ্রাসার অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাঠদান ও পাঠ গ্রহন কার্যদিবসে শতকরা ৮৫ দিন উপস্থিত, মাসিক ও সাপ্তাহিক পরীক্ষায় শতকরা ৬০ নম্বর পাওয়াসহ নিজস্ব অর্থায়নের উপবৃত্তি প্রাপ্তির বিভিন্ন শর্ত পূরণ করা সাপেক্ষে এদিন ইবতেদায়ী শাখার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রতি ৩ মাস পর পর ইবতেদায়ী শাখার শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজস্ব অর্থায়নের এ উপবৃত্তি প্রদান করা হয় বলে জানা গেছে।