বঙ্গবন্ধু’র রাজনৈতিক আদর্শের এক সৈনিক নুরুল আবছার চৌধুরী
-মুহাম্মদ এনামুল হক মিঠু
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকনিয়া থানার অন্তর্গত মীর্জাখীল গ্রামে আজ খেকে ৫৫ বছর আগে যে চাঁদটির উদয় হয়েছিল, তার নাম নুরুল আবছার চৌধুরী। কালক্রমে সেই চাঁদটি আজ ষোল কলা পূর্ণ করে নিজের আলোয় যেমন উদ্বাসিত, তেমনি তাঁঁর আলোয় সাতকানিয়ার প্রত্যন্ত জনপদও আলোকিত। এর পিছনে কী কারণ বিরাজ করছে তা তাঁর জীবনী না জানলে বোঝা যাবেনা। আসুন এক এক করে জেনে নেওয়া যাক এই ত্যাগী নেতার ইতিহাস।
নুরুল আবছার চৌধুরী তিনি রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্সসহ মাষ্টার্সসহ এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি-তে বিজ্ঞানের কৃতী ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও ছাত্র রাজনীতির প্রতি আসক্ত হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বিজ্ঞানে ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে শিবির মুক্ত করতে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে নিজের এ.জি.এস প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে দলীয় প্যানেলকে বিজয়ী করণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
রাজনৈতিক ও সামাজিক অভিজ্ঞতায় নুরুল আবছার চৌধুরী বর্তমানে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেছেন।
তিনি ১৯৯৭ হতে ২০১৩ ইং পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যকরী সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯১ হতে ১৯৯৪ ইং পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট হিসাবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কার্য সম্পন্ন করেন। শুধু তাই নয়, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চট্টগ্রাম শহরে অন্যতম পুরোধা ছিলেন এই বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সৈনিক।
বর্তমানে সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের গভর্নির বোডের সভাপতি হিসাবে অত্র কলেজের উন্নয়নে দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। সাতকানিয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য হিসাবে প্রসশনকে সহযোগিতা সহ নিজ এলাকাকে অপরাধ জনিত কাজ থেকে বিরত রেখে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
তাছাড়া ৯০ এর গণঅভ্যূত্থানে, গঠিত সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন। এখানেই শেষ নয়, তিনি সভাপতি হিসাবে সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ ১৯৮৬-১৯৯১ ইং পর্যন্ত শক্ত হাতে নেতৃত্ব দেন। সভাপতি হিসাবে সাতকানিয়া উপজেলা সমাজ কল্যাণ ফেডারেশন সহ তিনি রেজিস্টার্ট ক্লাব সমূহের সংগঠক ছিলেন, যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হয়ে সাতকানিয়া সরকারী কলেজ ছাত্র লীগ ১৯৮৩ হতে ১৯৮৫ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন এবং সাধারণ সম্পাদক আছেন সারথী নাট্য গোষ্ঠী, সাতকানিয়া সরকারি কলেজ। এছাড়া তিনি মিথ্যা মামলার জন্য ১৯৮৯ ইং সালে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ৫ মাস ১৭ দিন কারা বরণ করেন।
এমন ত্যাগী, জনকল্যাণমূখী সমাজ সেবক জনাব নুরুল আবছার উনার জীবনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সাতকানিয়াবাসীর জন্য যে অবদান রাখেন তা যেমন অনুকরণীয়, তেমনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
সাতকানিয়ার গণমানুষের ভাষ্য, তিনি এ পর্যন্ত যতবার দলীয় পদে ছিলেন, তিনি ততবার নিজের সম্পদ থেকে খরচ করে দল ও কর্মীদের পরিচালনা করেছেন, যা এ সমাজ ও রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরল। সম্প্রতি, নুরুল আবছার চৌধুরী এলাকায় ছাত্রছাত্রীর ও শিক্ষার ভীত মজবুত করার স্বার্থে সাতকানিয়ার থানার মীর্জারখীল উচ্চবিদ্যালকে কলেজে রূপান্তরিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
আমাদের তথাকথিত রাজনৈতিক নেতারা যেখানে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে রাতে রাতে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যান, সেখানে এমন নুরুল আবছার চৌধুরীর মত এমন নিঃস্বার্থ ও নিরহংকারী ব্যক্তি পাওয়া মানে আকাশের চন্দ্র পাওয়ার সামিল।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে আওয়ামীলীগে কাক ও হাইব্রিড নেতাদের ছড়াছড়ি। তাদের কারণে নুরুল আবছার চৌধুরীর মতো প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতা যাঁরা দলের অত্যন্ত দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে, যাঁরা দলের জন্য ছিল নিবেদিত প্রাণ তারাই আজ অবহেলিত। তাই, সাধারণ মানুষের অনেককে বলতে শুনেছি, তাঁরা নুরুল আবছার চৌধুরী মতো বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সৈনিকদের আওয়ামীলীগ চান, কোনো হাইব্রিড, যদু মধু দিয়ে নয় ।
—লেখক: মুহাম্মদ এনামুল হক মিঠু, চট্টগ্রাম।
নোটিশ: উক্ত লেখার সত্যতা ও সকল প্রকার দায় লেখকের। কোন ভাবেই পত্রিকার কর্তৃপক্ষ এই লেখার সত্যতার বিষয়ে দায় নিবেননা।