শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শেরপুরে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন করা হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’র জেলা কমিটি গঠন: সভাপতি নজরুল, সম্পাদক হযরত নকলায় ফাহিম চৌধুরীর গণ সংযোগ ও পথসভায় জনতার ঢল নকলায় শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যের আহবান নকলার বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন’র মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন ছাত্রনেতা জুবায়েদ হত্যার বিচার দাবিতে নকলায় কলেজ ছাত্রদলের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা পানিফলে কয়েকগুণ লাভ, বানিজ্যিক ভাবে চাষে ঝুঁকছেন কৃষক নকলার বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন আর নেই নকলায় শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন জোরদারে স্থানীয় পর্যায়ে করনীয় বিষয়ক সভা আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীর সাথে একমত পোষণ করে বিএনপি’র বিবৃতি

অনাহারির ঘরে ঘরে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন নকলার ইউএনও

এম.এম হোসাইন, নিজস্ব প্রতিনিধি:
  • প্রকাশের সময় | শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১
  • ৬০৫ বার পঠিত

শেরপুরের নকলায় করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রভাবে সরকার কর্তৃক ঘোষিত কঠোর লকডাউনের কারনে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় অনাহারি মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান। চলমান লকডাউনে প্রায় প্রতিদিনই নিজের গাড়িতে করে চাল, ডাল আলু, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী নিয়ে অসহায় খেটে খাওয়া অনাহারি মানুষদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।

কঠোর লকডাউনের মধ্যে অসহায়, দুঃস্থ ও কর্মহীনদের সরকারের ৩৩৩ নাম্বারে ফ্রি ফোন করে খাদ্যসহায়তা চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ও বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খাদ্যাভাবের সত্যতা যাচাইয়ের পরে ওইসকল পরিবারের মধ্যে খাদ্যসহায়তা দেয়া হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীসহ খাদ্যসহায়তা চাওয়া উপজেলার শতাধিক পরিবারের মাঝে এরইমধ্যে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

করোনার সময় দোকান,  গণপরিবহন, কারখানা, প্রাইভেট, কোচিং ও টিউশনি বন্ধ থাকায় শিক্ষিত-অর্ধ শিক্ষিত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা লোক লজ্জায় কারও কাছে সাহায্য চাইতে পারেন না। এদের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৩৩৩-এ ফোন দিলে আমরা খাদ্যসামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছি। এতে ওইসব পরিবার উপকৃত হচ্ছে। যাদের খাদ্যসহায়তা প্রয়োজন তারা সরকারি হেল্প লাইন ৩৩৩-তে বা ইউএনও-এঁর মোবাইলে ফোন দিয়ে খাদ্য সহায়তা চাওয়া পরিবারের মাঝে গুরুত্ব সহকারে দ্রুততার সহিত ও নাম-পরিচয় গোপন রেখে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

নাম-পরিচয় গোপন রাখার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও জাহিদুর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশে কঠোর বিধি-নিষেধসহ লকডাউন চলছে। এতে কর্মজীবী নিম্ন-মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার খাদ্যাভাবে দিনাতিপাত করছেন। কিন্তু এসব পরিবারগুলোর বাড়িতে খাদ্যসংকট দেখা দিলেও তারা কারও কাছে হাত পাতেন না। এমন পরিবারের সদস্যদের খাদ্যের কষ্ট লাঘবে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার আওতায় ৩৩৩-এ ফোন করলে খাদ্যসহায়তা নিয়ে আমরা তাদের বাড়িতে হাজির হচ্ছি। ইউএনও আরও জানান, ৩৩৩-এ ফোন ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে কারও খাদ্যাভাবের তথ্য পেয়ে ও সত্যতা যাচাইয়ের পরে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্দ্যোগে করোনায় কর্মহীন ও খাদ্যাভাবে থাকা পরিবারকে দেওয়া খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল, ডাল, গোলআলু, তেল, চিনি, লবন, ছোলাসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী দিয়ে ১৫ কেজি ওজনের একটি করে প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে বলে ইউএনও জাহিদুর রহমান জানান। কোনো রকম প্রচারণা ছাড়াই ৩৩৩-এর মাধ্যমে যে পরিমাণ কল আসছে, তা হিসেবের বাহিরে। আর প্রচার-প্রচারণা করা হলে তখন পরিস্থিতি কি দাঁড়াতো তা চিন্তা করা যায় না; এমনটাই জানালেন ইউএনও জাহিদুর রহমান।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জাহাঙ্গীর আলম জানান, করোনা কালীন সময়ে জনসেবার মান আগের চেয়ে খুব বেশি বৃদ্ধি করতে না পারলেও, যেকোন সেবা প্রদানে বিশেষ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় সেবা প্রদানে কোন প্রকার বিলম্ব করা হচ্ছেনা। ফলে উপজেলাবাসী করোনাকালীন সময়েও অনেকটাই স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন বলে অনেকে মনে করেন।

সহকারী প্রোগ্রামার (ভারপ্রাপ্ত উপজেলা তথ্য অফিসার) সাইমুন শাহানাজ জানান, গণপজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর সার্বিক ত্বত্তাবধানে লকডাউন চলাকালীন সময়ে খাদ্যাভাবে থাকাদের সেবা দিতে একটি ডেডিকেটেড উইং কল সেন্টার চালু করা হয়েছে। যেখানে কল আসলে কলটি সংশ্লিষ্ট ইউএনও-কে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, পরে নির্দিষ্ট পরিবারকে খাবার এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পৌঁছে দিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের এক গুরুত্ত্বপূর্ণ জনপদের নাম শেরপুর। নকলা শেরপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী ও অপার সম্ভাবনাময় উপজেলা। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলে মিলে নকলার উন্নয়নে ও সমৃদ্ধি সাধনে একসূত্রে গ্রথিত হয়ে কার্যসম্পাদনে নিয়োজিত। ক্রীড়া-শিক্ষা-সংস্কৃতির সুনির্মল পরিবেশে অব্যাহত উন্নয়ন প্রচেষ্টায় নকলা শেরপুর জেলার সকল সাফল্যের উজ্জ্বল অংশীদার।ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক সূচকে নকলা ঈর্ষণীয় অবস্থান তৈরী করেছে। মাদক, বাল্যবিয়ে, যৌতুক ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করছে। প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার সরকারের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। এভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে নকলা উপজেলা। নকলা উপজেলাটি শেরপুর জেলা তথা বাংলাদেশের একটি অন্যতম উপজেলা। এ উপজেলার অধিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিগন একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান। তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের দোড়গোড়ায় সরকারি-বেসরকারি সেবাসমূহ দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রকার গাফলতি করা হচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ

এই জাতীয় আরো সংবাদ
©২০২০ সর্বস্তত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত | সমকালীন বাংলা
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102