শেরপুরের নকলা উপজেলায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৯ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে মাস্ক পরিধান না করায় ২৯ জুন মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা শহরের বিভিন্ন মহল্লায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ৯ পথচারীকে মোট এক হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেন আদালতের নির্বাহী বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান।
করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯) সংক্রমণ রোধে ২৮ জুন সোমবার থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। তবে শেরপুর জেলার সবকয়টি উপজেলায় লকডাউন আইন মানতে সাধারণ জনমনে অনীহা সুস্পষ্ট। লকডাউনের প্রথম দিনের শুরুতে অন্যান্য দিনের মতোই জনগনকে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে সোমবার নকলা হাট বার হওয়ায় শহরের রাস্তাগুলোতে সাধারন জনগনের উপস্থিতি ছিলো লক্ষ্য করার মতো। তবে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় মুহুর্তের মধ্যেই বাজার একদম জনমানব শূণ্য হয়ে যায়।
সোমবার দুপুর থেকে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ লকডাউন কার্যকর করতে ও জনসচেতনতা সৃস্টি করতে মাইক হাতে রাস্তায় নামেন। সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমান এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার আহাম্মেদ ৯ জনকে ২ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করেন।
৪ দিন ব্যাপী এ লকডাউন কার্যকর করতে লকডাউনের দ্বিতীয় দিন (মঙ্গলবার) বিকেলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান-কে নকলা শহরের বিভিন্ন গলিতে নিজে মাইকের মাধ্যমে জনগনকে সচেতন করতে ও সকলকে মাস্ক পরিধান করতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানাতে দেখা গেছে। সচেতনতা সৃস্টির পাশাপাশি মঙ্গলবার বিকেলে ৯ পথচারীকে মোট এক হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেন আদালতের নির্বাহী বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান।
ইউএনও জাহিদুর রহমান বলেন, প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সচেতনতাই একমাত্র উপায়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে মাস্ক পরিধান করা, পরিচ্ছন্নতা, সতর্কতা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোন বিকল্প নেই বলে তিনি জানান। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না আসার আহবানও জানাচ্ছেন তিনি। সংক্রমণ না কমা পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। তাছাড়া লকডাউন কার্যকর করতে সোমবার সকাল থেকেই নকলা শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়সহ ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন বাজারে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে সাধারন জনগন লকডাউন আইন মেনে চললেও, অনেকাংশে উদাসিন গ্রামীন জনপদ। অজ্ঞ, অশিক্ষিত, হতদরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষগুলো সচেতন না হলে করোনায় বড় ভয়াবহতার আশঙ্কা করছেন সুশীল সমাজ। গ্রামের অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিত কর্মজীবী মানুষদের সচেতন করা সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। সারাবিশ্বে প্রচারণা চললেও, করোনা ভাইরাস কি? সেটাও মনে হয় জানেন না বা বুঝেন না নকলার গ্রামাঞ্চলের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ; এমনটাই মনে করছেন সুধীজন। তাই সচেতনতা বৃদ্ধিকরার পাশাপাশি কঠোর আইন প্রয়োগ করা জরুরি বলে মনে করছেন তারা।